গোলাম হায়দার

মডেল  খামারী

 

গোলাম হায়দার একজন উদ্যোমী। খামারী গোলাম হায়দার সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার পোতাজিয়া গ্রামের একজন সুপরিচিত খামারী। মাত্র দুইটি গাভী দিয়ে সংসার পৃথক করে দেন বাবা। পারিবারিকভাবে তিনি ছোট বেলা থেকেই গাভীর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মাঝে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পুকুর লিজ নিয়ে মাছের চাষ শুরু করেন। মাছের ব্যবসায় লাভের টাকা দিয়ে চারটি গাভী কেনেন। বর্তমানে তার ৫০টি গাভী আছে । পোতাজিয়া গ্রামটি বন্যাপ্রবণ এলাকা। এখানে ছয়মাস পানি থাকে এবং ছয় মাস শুকনা থাকে। শুকনার সময় গরুগুলো বাথানে থাকে। বাথানে গাভী গুলোর নির্দিষ্ট নাম থাকায় দুধ দোহনের সময় নাম ধেও ডাকলে নির্দিষ্ট গাভীই আসে।
এপ্রিল /২০২৩ এসইপি ডেইরী প্রকল্প শাহজাদপুরে আসে। খামারীদের সঙ্গে আলোচনা কেও জানা যায় ,খামারীরা পেটের বাচ্চা নষ্ট হওয়ার ভয়ে গর্ভবতী অবস্থায় গাভীকে কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ায় না । এই দলে গোলাম হায়দারও ছিলেন। এনডিপি— এসইপি ডেইরী প্রকল্পের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ , কর্মশালা, উঠান বৈঠক এবং পরিবেশ ক্লাবের মাধ্যমে খামারীরা এখন জানেন প্রতি তিনমাস পর পর গাভীর ওজন অনুযায়ী কৃমিনাশক খাওয়াতে হয়। নিয়মিত কৃমিনাশক এবং টিকা প্রদানের ফলে হায়দারের খামারে রোগব্যাধি কম , বাছুর মৃত্যুহার শূন্য এবং নিয়মিত গাভীর বাচ্চা হচ্ছে। ফলে দুধ উৎপাদন কাংখিত পরিমাণে হচ্ছে।
এনডিপি—এসইপি ডেইরী প্রকল্পের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন অবদান সাইলেজ উৎপাদন । পোতাজিয়া গ্রামের লোকজন নেপিয়ার, জাম্বু ঘাস উৎপাদন করে গাভী পালন করলেও তারা কখনো সাইলেজ উৎপাদন করেনি। মিল্কভিটা ও প্রাণিসম্পদ অফিস তাদের ৩০ বছরের কর্মক্ষেত্রে সাইলেজ উৎপাদন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এসইপি ডেইরী প্রকল্প আসার পরে বিভিন্ন সময়ে খামারীদের, বিশেষকরে পরিবেশ ক্লাবের মাধ্যমে মিটিং করে অবশেষে তাদের দিয়ে পোতাজিয়া গ্রামের যে কয়েকজন উদ্যোমী খামারী মিলে ৫১ বিঘা জমিতে প্রথম বারের মতো ভূট্টার সাইলেজ তৈরী করেছে তাদেও মধ্যে গোলাম হায়দার একজন। সাইলেজ খাওয়ানোর ফলে বষার্র মৌসুমে তার গাভীর দুধের উৎপাদন বেড়েছে এবং খড় ও দানাদার খাবার কম ব্যবহার হয়েছে । ফলে দুধ উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় গোলাম হায়দার আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে।